Posts

Showing posts from July, 2024

বাংলাদেশের আগুনপাখি

Image
বাংলাদেশের আগুনপাখি --দীপ্তমান ঘোষ (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ)-- আজ বাংলাদেশের আকাশে  হঠাৎ একটা জ্বলন্ত আগুনপাখি উড়ছে, বিদগ্ধ দুপুরে, হাজার বোমব্লাস্টের মধ্যে, পিচগলা রাস্তায় শক্ত পাথরের মত গড়িয়ে চলা..  আবু সাইদের মৃতদেহটাকে লক্ষ্য রেখে,  আগুনপাখিটা উড়ছে। আজ বাংলাদেশের আকাশে,  হঠাৎ... কিভাবে কিজানি.. কয়েক হাজার জ্বলন্ত আগুনপাখি, গনগনে লাল ঠোঁট দিয়ে ঠুকরে ঠুকরে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রমেশিনের জন্য একটা কবর খুঁড়ছে। পেট্রোল, বারুদ আর মবিলের একটা তীব্র গন্ধ পাচ্ছি... আগুনপাখিগুলো কিন্তু উড়ছে...। আজ বাংলাদেশের মাটিতে,  চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহীতে,  কয়েকটা সোনালী আগুনপাখি গোল হয়ে.. চৌবাচ্চার মধ্যে ৭২ খানা তেলাপিয়াকে,  উন্মাদের মতো ল্যাজ ঝাপটাতে দেখছে। আজ এই বাংলার মাটিতে,  জ্বলন্ত লাল আগুনপাখিগুলো, তীক্ষ্ণ চোখে পরিমাপ করে নিচ্ছে... পুলিশ আর ছাত্রলীগের হাতের রড-বন্দুক-চাপাতিগুলো, তীব্র দৃষ্টিতে মেপে নিচ্ছে.... ৫২তে আবু বরকতের রক্তের শুকনো দাগের উপর  আবু সাইদের তাজা টকটকে রক্ত-প্রলেপের ক্ষেত্রফল। আজ বাংলাদেশের দিগন্তে,  পাখি...

বিজন ভট্টাচার্যের জন্মদিনে

Image
বিজন ভট্টাচার্যের জন্মদিনে..... (কলমে -- দীপ্তমান ঘোষ) বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকের গোড়ায় বাংলার রাজনৈতিক আকাশে ঘনঘন পটপরিবর্তন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধবাজদের নোংরামি, মন্বন্তরের কঠোর অভিঘাতে একমুঠো খাবারের জন্য সর্বহারাদের লড়াই, বেকার সমস্যার ব্যাপক ব্যাপ্তি, পৃথিবীব্যাপী মৃত্যু-ক্ষুধার জর্জরতা.... , যখন সমগ্র বাঙালি সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে, সেই সময়ই বাংলার সংস্কৃতিমনস্ক নাট্যতোষামোদী একদল যুবক বাংলার রঙ্গমঞ্চে এক নতুন ভাবোন্মাদনার সতেজ সুবাস বহন করে আনে। সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সমসাময়িক প্রচলিত কিছু ন্যাকা,বোকা,গোদা, সারবত্তাহীন কিছু জঘন্য নাট্যভাবনাকে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ে সুনির্দিষ্ট সুসংবদ্ধ সামাজিক, রাজনৈতিক,ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক তানে পর্যালোচিত , সূক্ষতর চিন্তনের বুননে নির্মিত কিছু শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয় বাংলার নাট্যামোদী জনসাধারণের সামনে। চল্লিশের দশকের সাম্যবাদী চেতনার অন্তঃপ্রবাহে আন্দোলিত এবং উৎকৃষ্ট চিন্তাস্রোতে ধাবিত, নাট্য জগতে আমূল পরিবর্তন সৃষ্টিকারী এই ‘গণনাট্য আন্দোলনেরই’ ফসল ছিলেন বিজন ভট্টাচার্য।  তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থার গূঢ়তর পর্যালো...

গুয়ের্নিকা

Image
           গুয়ের্নিকা, পাবলো পিকাসো। যুদ্ধের বিরুদ্ধে শিল্প চিরকালই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাবলো পিকাসোর গুয়ের্নিকা ছবির দীর্ঘ ক্যানভাস যেন সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিমণ্ডল, শত নরনারী এবং শিশুর আর্তচিৎকার,  হাজার হাজার সর্বহারার দিকবিদিক ছুটোছুটি ও মৃত্যুর এক নিখুঁত খসড়া। ক্যানভাসের ছত্রে ছত্রে ফুটে ওঠে  স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের সময় গুয়ের্নিকা শহরের উপর নিক্ষিপ্ত বোমার আঘাতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন নাৎসি বর্বরতার ভয়াবহতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পিকাসোর স্টুডিওতে এক নাৎসি অফিসার পিকাসোর  এই ছবিটি দেখে জিজ্ঞাসা করেন ‘এটা কি আপনার কাজ?’ উত্তরে পিকাসো বলেছিলেন ,‘না, এটা আপনাদের কাজ।’ কিন্তু এই ছবির মূল উপজীব্য কি?  যদি ছবিটা ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তবে দেখতে পাবেন, চওড়া  চোখওয়ালা এক অদ্ভুত ষাঁড় এর দিকে মুখ করে আর্তনাদ করছে এক মহিলা, যার জিভের বদলে তিনটে তীক্ষ্ণ ছোড়া বিদ্যমান, এবং যার কোলে একটি মৃত বাচ্চা। ফ্যাসিবাদী আক্রমণের প্রতিনিধিত্বকারী রূপকার্থে ব্যবহৃত ষাঁড় এর বিরুদ্ধে সাধারণ অসহায় মানুষের স্বরূপ ওই মহিলাটি যেন তীক্ষ্ণ আর্তনাদের ম...